বিদেশি বিনিয়োগকারীরা গত এক সপ্তাহের মধ্যেই ভারতের শেয়ারবাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি রুপি তুলে নিয়েছেন।
ডিপোজিটরিগুলোর ডেটাগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ১-৮ এপ্রিলের মধ্যে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা (এফপিআই) ৭ হাজার ৭০৭ কোটি রুপি নিট বিনিয়োগ করেন। এ সময়টাতে বাজারে সংশোধনের প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ফলে বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো শেয়ার কেনার বড় সুযোগ তৈরি হয়।
এর আগে, ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত ছয় মাস বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ছিলেন মূলত নিট বিক্রেতা। পুঁজিবাজার থেকে তাঁরা ১ দশমিক ৪৮ লাখ কোটি রুপির বিশাল পরিমাণ শেয়ার প্রত্যাহার করেছিলেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক অবস্থানের ফল এটি। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ আক্রমনাত্মক ভাবে সুদের হার বৃদ্ধি করতে পারে সেই আশঙ্কায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতের পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি প্রত্যাহার করছেন। এই প্রবণতা মূলত মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদ হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা আর ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কারণেই।
ভারতের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিবন্ধিত বিনিয়োগ উপদেষ্টা সোনম শ্রীবাস্তব ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভিকে বলেছেন, ‘আমরা আশা করছি, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতে আবার বড় আকারে ফিরে আসবেন। আমাদের ভ্যালুয়েশন এখন অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে। ফলে ইউক্রেন সংকট প্রশমিত হলেই তাঁরা ফিরবেন।
ডিপোজিটরির তথ্য অনুসারে, এপ্রিলের সর্বাধিক ছুটি সমৃদ্ধ সপ্তাহে, ১১-১৩ তারিখের মধ্যেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় পুঁজিবাজার থেকে ৪ হাজার ৫১৮ কোটি রুপি তুলে নিয়েছেন। যেখানে আম্বেদকর জয়ন্তী এবং গুড ফ্রাইডে উপলক্ষে যথাক্রমে ১৪ এপ্রিল এবং ১৫ এপ্রিল পুঁজিবাজারগুলো বন্ধ ছিল।
এক সপ্তাহের মধ্যে বেশি ছুটি, ইউএস ফেডের সুদের হার বৃদ্ধির আশঙ্কা থেকেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিট বিক্রেতায় পরিণত হয়েছিলেন। মর্নিংস্টার ইন্ডিয়ার অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর হিমাংশু শ্রীবাস্তব বলেন, এই পরিস্থিতি ভারতের মতো উদীয়মান বাজারে বিনিয়োগের সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করতে প্ররোচিত করতে পারে।
এদিকে শুধু পুঁজিবাজার নয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পর্যালোচনাধীন সময়কালে ঋণ বাজার থেকেও নিট ৪১৫ কোটি রুপি প্রত্যাহার করেছেন। যেখানে আগের সপ্তাহে বাজারে ঢুকেছে ১ হাজার ৪০৩ কোটি রুপি।
গত মাসে ইউএস ফেড ২০১৮ সালের পর প্রথমবারের মতো সুদ হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। এভাবেই মহামারিকালের সহজ মুদ্রানীতির সমাপ্তি ঘটেছে। চলতি বছর সুদের হার আরও বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে ফেড। যেখানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলমান। ফলে ইউএস ফেডের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
সম্পাদকঃ মেহেদী হাসান
প্রকাশকঃ জি.এম এনামুল
প্রধান কার্যালয় - ৯৯,কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার,ঢাকা ১২১৫
মোবাইলঃ 01718863323
ই-মেইলঃ [email protected]