খুলনায় ইজিবাইকচালক মেহেদী হাসান হত্যা মামলায় চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ওই মামলা থেকে একজন খালাস পেয়েছেন। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে খুলনা জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন খুলনা নগরের লবণচরা থানার বোখারীপাড়া এলাকার মো. বাবু হোসেন, দক্ষিণ লবণচরা মদিনাবাদ এলাকার মো. জাহিদুল ইসলাম, মাথাভাঙ্গা মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদ রোড এলাকার মো. ফয়সাল হাওলাদার এবং দারোগার লিজ এলাকার মো. আবু রায়হান। রায় ঘোষণার সময় আসামি রায়হান ছাড়া অন্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আরিফ মাহমুদ বলেন, রায় নিয়ে আদালতের বিশেষ পর্যবেক্ষণ রয়েছে। সাধারণত এমন মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু এ মামলার আসামিদের বয়স ১৯ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। তাই বয়স বিবেচনায় আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।
২০১৮ সালের ১০ আগস্ট বিকেলের দিকে ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন মেহেদী। পরদিন সকাল ১০টার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নিহত মেহেদী হাসানের পরিবার নগরের গল্লামারী এলাকার এক ভাড়াবাড়িতে থাকত। মেহেদীর বাবা মো. আবদুর রহিম ব্যাপারী ছিলেন ফল ব্যবসায়ী। মেহেদী বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। এর পাশাপাশি ভাড়ায় ইজিবাইক চালাতেন। ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট বিকেলের দিকে ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন মেহেদী। রাতে ফিরে না আসায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেন পরিবারের সদস্যরা। পরদিন সকাল ১০টার দিকে মেহেদীর বাবা জানতে পারেন, লবণচরা থানাধীন কুয়েত মসজিদের পাশে এক যুবকের লাশ পড়ে আছে। সেখানে গিয়ে তিনি মেহেদীর লাশ শনাক্ত করেন। ওই ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেনদুই দিন পর ১৩ আগস্ট পুলিশ ছোটবান্দা খান বাহাদুর সড়কে হাওলাদার রাইস মিলের ভেতর থেকে ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক উদ্ধার করে। পরে ওই এলাকা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে মো. সোহেল, মো. বাবু হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. ফয়সাল ও মো. আবু রায়হানকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল ছাড়া বাকি চারজন হত্যাকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তাঁরা বলেছিলেন, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে মেহেদীর ইজিবাইক ভাড়া নিয়ে নির্জন স্থানে গিয়ে মেহেদীকে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর ওই স্থানে লাশ ফেলে রেখে যান তাঁরা।
২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি লবণচরা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দিন মোল্লা পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় মোট ৩৪ জন সাক্ষী ছিলেন। এর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য নিয়েই বিচারক রায় ঘোষণা করেন।
সম্পাদকঃ মেহেদী হাসান
প্রকাশকঃ জি.এম এনামুল
প্রধান কার্যালয় - ৯৯,কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার,ঢাকা ১২১৫
মোবাইলঃ 01718863323
ই-মেইলঃ [email protected]