নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত প্রায় পাঁচ মাস ধরে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী নেই। এতে চিকিৎসক ও নার্সরা চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনায় যেমন হিমশিম খাচ্ছেন, তেমনি গরিব রোগীরা পড়েছেন কঠিন বিপাকে। তবে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কবে হবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি উপজেলা ও জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন অনেক রোগী ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়। বহির্বিভাগে তিন থেকে পাঁচ শত রোগী প্রতিদিন ভিড় জমায়। হাসপাতালে আসা এসব রোগী অধিকাংশই গরিব । তাদের পক্ষে ঔষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী কেনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়, দারিদ্র্যতার কারনেই একটা ভরসা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ঔষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী না থাকায় রোগীরা পড়ছেন কঠিন বিপাকে।
খোজ নিয়ে দেখা যায়, শুধু রোগীরা নয় ঔষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে চিকিৎসক ও নার্সরা চিকিৎসা কার্যক্রমে অনেক সমস্যায় পড়েছেন।
কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া এক রোগীর অভিভাবক বলেন, পেটেব্যাথা ও ডায়রিয়ার জন্য এ হাসপাতালে আমার সন্তানকে ভর্তি করেছি। আমি গরিব মানুষ বলে এ হাসপাতালে এসেছি যাতে সহজে অল্প খরচে চিকিৎসা করাতে পারি। কিন্তু ঔষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী না থাকায় সব কিনে নিতে হচ্ছে, ঔষুধ, স্যালাইন ও স্যালাইনসেটসহ সবকিছু কিনতে হচ্ছে। গরিব মানুষ এত টাকা কোথায় পাবো তাই দোকানে বাকি রেখেছি।
লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি চাহিদা গ্যাস, ডায়াবেটিস ও প্রেসারের ওষুধ। এর কোনো ওষুধ হাসপাতালে নেই। এ ছাড়া ঠান্ডা এলার্জির জন্য হিসটাসিন ও অ্যান্টিবায়োটিক ঔষুধ এজিথ্রোমাইসিন সবচেয়ে বেশি চলে, এগুলোও নেই। গত প্রায় পাঁচ মাস ধরে অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী হাসপাতালে সরবরাহ নেই।
তারা আরো জানান, গত প্রায় পাঁচ মাস ধরে হাসপাতালে রিএজেন্ট (প্যাথলজি পরীক্ষা করার কিট) নেই। তাই সব প্যাথলজি পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
নার্সদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতাল চালাতে গেলে ক্যানুলা, সিরিঞ্জ, স্যালাইন ও স্যালাইন সেট অতি প্রয়োজনীয়। অথচ তিন-চার মাস ধরে এগুলোর সরবরাহ নেই।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা আগে অধিকাংশ ওষুধই হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করতে পারতাম। এতে রোগীরা সন্তূষ্ট ছিলেন। কিন্ত দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে ৯০ ভাগ ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী নেই। তাই চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে নানা সমস্যা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ঔষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়ের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন লাগে। এরপরই ঠিকাদারেরা ওষুধ কিনতে পারেন। সেই অনুমোদন না পাওয়ায় ঠিকাদারেরা ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী কিনতে পারেননি। এ জন্য এই সংকট তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে, নড়াইলের সিভিল সার্জন ডাঃ নাছিমা আকতার বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন না হওয়ায় ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী ঠিকাদাররা কিনতে পারেন নাই, কবে অনুমোদন হবে তা নিশ্চিত বলতে পারছি না। তবে গত সোমবার এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানির কিছু ঔষুধ হাসপাতালে এসেছে।
সম্পাদকঃ মেহেদী হাসান
প্রকাশকঃ জি.এম এনামুল
প্রধান কার্যালয় - ৯৯,কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার,ঢাকা ১২১৫
মোবাইলঃ 01718863323
ই-মেইলঃ info@manobkollan.com