নড়াইল জেলা প্রতিনিধি।
নড়াইল জেলা হতে আজ আমি সুদীর্ঘকালের চাকুরী জীবন শেষ করে অবসর জীবনে পদার্পণ করলেন। সুসজ্জিত গাড়িতে করে নিজ বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন নড়াইলের পুলিশ সুপার।
সোমবার ১ আগস্ট তার চাকরি জীবন শেষ হওয়ায় নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার জনাব প্রবীর কুমার রায়, পিপিএম-বার (অতিরিক্ত ডিআইজি নড়াইল এর কার্যালয় হতে তাকে সম্মাননাসহ সুসজ্জিত গাড়িতে করে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করলেন। বিদায় মূহুর্তে পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ বলেন, নজরুল নড়াইল জেলায় কর্মরত থাকাকালীন সময়ে দীর্ঘদিন যাবৎ নড়াইল জেলা পুলিশের ডিএসবি এবং মিডিয়া শাখায় অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার কর্মকালীন সময়ে তার নড়াইল জেলা পুলিশের বিভিন্ন রকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও মিডিয়ার মাধ্যমে নড়াইল জেলা পুলিশের ভালো কাজ গুলি মিডিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করিয়া জেলা পুলিশের সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছেন সব সময় মানুষের কল্যাণে সে কাজ করে গেছেন যা একজন পুলিশ সদস্যের জন্য খুবই গর্বের বিষয়। তার অবসর জীবন সুন্দর ও নির্মল হোক- এ প্রত্যাশা সকলেই ব্যক্ত করেন।
বিদায়ী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ রিয়াজুল ইসলাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন ও অর্থ, জনাব মোঃ দোলন মিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল নড়াইল, ডিআই ও(১) জেলা বিশেষ শাখা, নড়াইল সহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য ।
অবসর প্রাপ্ত নজরুল ইসলাম বলেন, আমি বাংলাদেশ পুলিশের একজন গর্বিত সদস্য। সুস্থ শরীরে চাকুরি জীবন শেষ করে আজ আমি অবসর জীবনে পদার্পণ করলাম। আমি মোঃ নজরুল ইসলাম যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার বাঘারপাড়া পৌরসভাধীন ১নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা। আমার পিতা মৃত নেছার উদ্দিন। তিনি বিগত ১৫ বৎসর পূর্বে মহান আল্লাহ-তায়ালার ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে পাড়ি জমান। জীবদ্দশায় তিনি একজন কৃষক ছিলেন। আমার কৃষক পিতা অনেক পরিশ্রম করে আমাদের আট ভাইবোনকে মানুষ করেছেন। আমার বড় ভাই পিতার পেশাকেই নিজের পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং বাকি তিন ভাই চাকুরি করি। আমি ০১/১১/১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনিতে যোগদান করি। দীর্ঘদিন বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত ছিলাম। চাকুরি জীবনে উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ডে অবদান রাখায় বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে একাধিকবার পুরস্কৃত হয়েছি। দাম্পত্য জীবনে আমার স্ত্রী ও একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। আমার সন্তান মাস্টার্স পাশ করার পর বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। আমি বাংলাদেশ পুলিশে চাকুরিরত অবস্থায় সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে জনগণের পাশে থেকে পুলিশি সেবা মানুষের দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। চাকুরির খাতিরে হয়তোবা আমার কোনো কর্মকাণ্ডে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকতে পারে- যেটা সম্পূর্ণরূপে আমার অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। তবে এটুকু বলতে পারি, ব্যক্তিস্বার্থে শুধুমাত্র মনোর অগোচরে ব্যতীত স্বজ্ঞানে কারো মনো কখনো ব্যথা দেয়নি এবং দেওয়ার চেষ্টাও করিনি। তবুও যদি কেউ আমার কোনো কর্মকাণ্ডে কষ্ট পেয়ে থাকে তাহলে আমি তাদের কাছে যাবার বেলায় ক্ষমাপ্রার্থী।
চাকুরি জীবনের শেষ প্রান্তে নড়াইল জেলা পুলিশে যতদিন চাকুরি করেছি, এই জেলার পুলিশের কথা আসলে ভুলার নয় এ জেলার পুলিশের কথা আমি কখনো ভুলবো না এরা আমাকে অনেক অনেক ভালবেসেছেন যাবার বেলায় এই জেলার পুলিশের প্রতি রইলো আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা এ ছাড়াও যে সকল অফিসারদের সাথে চাকরি করেছি তাঁরা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত থাকাবস্থায় বিভিন্ন জেলার যে সকল পুলিশ সুপারের সঙ্গে চাকুরি করেছি এবং জেলার বিভিন্ন স্তরের অফিসার ও আমার সহকর্মীদের সাথে চাকরি জীবন শেষ করলাম তাদের কথা আসলেই কোনদিন ভুলবো না। তাঁরা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশে চাকুরি করতে গেলে যা কিছু শেখার প্রয়োজন তা আমি তাঁদের কাছ থেকেই শিখেছি। তার অবদানের কথা আমি আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ভুলতে পারবো না। এ কারণে তাদের প্রতি রইল আমার শতকোটি সালাম। আর আমার সহকর্মী যারা আছে তাদের প্রতি রইল আমার আন্তরিক সালাম ও ভালোবাসা। যাবার বেলায় আমার ফেসবুকে যতগুলো বন্ধু-বান্ধব, পুলিশ অফিসার, সাংবাদিক বন্ধুরা রয়েছে তাদের সবার প্রতি রইল আমার শতকোটি সালাম। দোয়া করবেন যেন আমি বাকি জীবন বাংলাদেশ পুলিশকে সেবা দিতে পারি। যাবার বেলায় এক লাইন কবিতা দিয়ে বিদায় নিব- “যেতে নাহি চাই ,তবুও যেতে হয়- এইতো চাকরি জীবনের নীতি।” পরিশেষে সবার প্রতি সালাম রেখে বিদায় নিলাম।
সম্পাদকঃ মেহেদী হাসান
প্রকাশকঃ জি.এম এনামুল
প্রধান কার্যালয় - ৯৯,কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার,ঢাকা ১২১৫
মোবাইলঃ 01718863323
ই-মেইলঃ info@manobkollan.com