জবি প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনকে নিয়ে অসত্য সংবাদ প্রকাশ করায় প্রতিবাদ জানিয়েছে জবিশিস।
সোমবার (১৮ জুলাই) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়েছে, অদ্য ১৮-৭-২০২২ তারিখ সকাল ১১ টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতিকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদটি শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের নজরে আনা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টিকে পরিষ্কার করা প্রয়োজন বলে সমিতি মনে করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক এবং একাডেমিক এ দুই ধরনের পদ রয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, প্রশাসনিক পদ বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন অর্থাৎ উপাচার্য মহোদয়ের এথতিয়ারভুক্ত পদসমূহ কে বোঝায়, যেমন হলের প্রভোষ্ট, প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) পরিবহন প্রশাসক, পরিচালক (গবেষণা) পরিচালক (আইটি) ইত্যাদি। অন্যদিকে ডিন এবং চেয়ারম্যান পদসমূহ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ অনুযায়ী জৈষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত কোন পদ নয়। বিষয়টি খুবই পরিষ্কার। কাজেই প্রকাশিত সংবাদটি প্রকাশের পূর্বে সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দের এই বিষয়গুলো বিস্তারিত জানার প্রয়োজন ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন পদ্ধতি সম্পর্কে পরিষ্কার জ্ঞান না রেখে অসত্য তথ্য পরিবেশন করে একজন শিক্ষকের সম্মানহানি করা হয়েছে। যখন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিণত করে শিক্ষার উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন এ ধরনের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে হেয় করা বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশের বর্তমান অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার শামিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এ ধরনের ঘৃণ্য কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ভবিষ্যতে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আরো সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য বলা হচ্ছে। অন্যথায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষকবৃন্দের সম্মানের স্বার্থে সমিতি আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
বিষয়টি পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, আমার স্নেহভাজন সাংবাদিকরা প্রকৃত অবস্থা না জেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পথ সমূহের বিন্যাস না বুঝে এরকম একটি সংবাদ পরিবেশন করে আমাকে জনসম্মুক্ষে হেয় করার অপচেষ্টায় আমি খুবই ক্ষুব্ধ এবং বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়েছি। এ ধরনের অসত্য সংবাদ পরিবেশন পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ভাবমূর্তিকে খাটো করা হয়েছে যা এই ক্যাম্পাসের সাংবাদিকদের নিকট থেকে আশা করিনি। ভবিষ্যতে এ ধরনের অসত্য তথ্য পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি এবং একই সাথে এ ধরনের অপচেষ্টা বন্ধ না হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।
এ ব্যাপারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ডিন পদ আমাদের আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এখানে ভিসির কিছু করার নেই। নিয়ম মোতাবেক যে হওয়ার সে’ই হবে। ভিসি ইচ্ছা করলে দিতেও পারবে না, ইচ্ছে করলে বাদ ও দিতে পারবে না। আইনগতভাবে যে পাওয়ার সেই পেয়েছে। ডিন-চেয়ারম্যান পদ যে প্রাপ্য সেই পাবে। অন্যান্য পদ যেমন পরিবহন প্রশাসক এসব ক্ষেত্রে ভাইস চ্যান্সেলর যাকে খুশি তাকে দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫-এর ২২ (৫) ধারা মোতাবেক সিন্ডিকেটের অনুমোদন সাপেক্ষে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগসমূহের মধ্যে জ্যেষ্ঠতম অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন কে পরবর্তী ০২ (দুই) বছরের জন্য সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের একাংশের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন।
এর আগে জবিশিস নির্বাচনের ইশতেহার বলা হয়েছিলো, ‘অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন-অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান প্যানেল নির্বাচিত হলে শিক্ষকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়ার লক্ষ্যে নির্বাচিত সদস্যরা প্রশাসনিক পদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। আমরা আমাদের ইশতেহার বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’ তবে প্রশাসনিক পদকে একাডেমিক পদ উল্লেখ করে বেশ কয়েকটি পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ ও অনলাইন পোর্টালে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা।
সম্পাদকঃ মেহেদী হাসান
প্রকাশকঃ জি.এম এনামুল
প্রধান কার্যালয় - ৯৯,কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার,ঢাকা ১২১৫
মোবাইলঃ 01718863323
ই-মেইলঃ [email protected]